শনিবার ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১২:৫৩
বিজেপি'র সামনেই নবীর শত্রু'র' পক্ষে রহমতের দোয়া চলছে !!

আলী (আ.)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা মানে নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, আর যে নবী(সা.)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তাকে ‘লানত’ দেওয়া ঈমানী দায়িত্ব, কিন্তু দুঃখের বিষয় বিশ্বের মুসলমান নবীর শত্রুকে লানত তো দেয় না, বরং নবীর শত্রুর উপরে যাতে আল্লাহর রহমত বর্ষন হয়, তার জন্য মুসলমান দোয়া করে৷

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী,

রিপোর্ট: মুস্তাক আহমদ (সত্যের পথে)

আলী (আ.)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা মানে নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা, আর যে নবী(সা.)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তাকে ‘লানত’ দেওয়া ঈমানী দায়িত্ব, কিন্তু দুঃখের বিষয় বিশ্বের মুসলমান নবীর শত্রুকে লানত তো দেয় না, বরং নবীর শত্রুর উপরে যাতে আল্লাহর রহমত বর্ষন হয়, তার জন্য মুসলমান দোয়া করে৷
যেখানে ইহুদী আছে, যেখানে বিজেপি আছে, যেখানে জায়োনিষ্ট আছে, যেখানে আর এস আর এস আছে, যেখানে খ্রীষ্টানরা আছে, সেই সকল জায়োনিষ্টের সামনেই এই মুসলমানরা নবীর শত্রুর উপরে দোয়া বর্ষণের প্রতিযোগীতা করছে৷ 
 নবীর শত্রুর উপরে লানত পড়বো না দোয়া করবো আসুন একটি —একটি দলিলভিত্তিক পর্যালোচনা উপস্থাপন করি৷৷

ভূমিকা:

ইসলামের ইতিহাসে কিছু প্রশ্ন আছে, যেগুলো এড়িয়ে যাওয়া যায় না। বরং কোরআন ও হাদিসের আলোকে সেগুলোর সৎ বিচার করা ফরজ। এমনই এক প্রশ্ন হলো—
যারা হযরত আলী (আঃ)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, নবী (সঃ) তাদের সম্পর্কে কী অবস্থান নিয়েছিলেন?
— আর যদি যুদ্ধের ময়দানে নবী (সঃ) একদিকে থাকেন, আর অপরদিকে কিছু সাহাবী—তাহলে একজন মুসলমানের অবস্থান  কার পক্ষে হবে ?

১. আলী (আঃ)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ মানেই নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ৷  সুন্নী হাদিসের সুস্পষ্ট ঘোষণা আছে, আল্লাহর
রসূলু  (সঃ) বলেন— “হে আলী! তোমার সাথে যুদ্ধ করা মানে আমার সাথে যুদ্ধ করা, আর তোমার সাথে সন্ধি করা মানে আমার সাথে সন্ধি করা।” সূত্র (সুন্নী গ্রন্থ থেকে):
মুস্তাদরাক আলা সহীহাইন – হাকিম নিশাপুরি, খণ্ড ৩, পৃ. ১৩৯
আল-হাইসামি, মাজমাউয জাওয়াইদ, খণ্ড ৯, পৃ. ১৩৩
ইমাম হাকিম বলেন:  “এই হাদিসটি বুখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ।”

অর্থাৎ, আলী (আঃ)-এর বিরুদ্ধে যে অস্ত্র তুলেছে, সে সরাসরি নবীর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলেছে।

২. ইতিহাসের অমোঘ সত্য: জামাল যুদ্ধ, সিফফিন যুদ্ধ ও নাহরাওয়ান যুদ্ধ কলেমা পড়নেওয়ালারা আলী(আঃ)-এর বিরুদ্ধে মুসলমানরা সংগঠিত করেছে৷

ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—
(১) জামাল যুদ্ধ → আলী (আঃ)-এর বিরুদ্ধে
(২) সিফফিন যুদ্ধ → আলী (আঃ)-এর বিরুদ্ধে
(৩) নাহরাওয়ান যুদ্ধ → আলী (আঃ)-এর বিরুদ্ধে
— এই যুদ্ধগুলো কোনো কাফেরের বিরুদ্ধে নয়—
বরং  গদীরে খুমে নবীর ঘোষিত 'মওলা' হযরত আলীর  বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হয়েছে।

৩. আলীর প্রতি শত্রুতা = মুনাফিকির নিদর্শন
রাসূলুল্লাহ (সঃ) আরও বলেন—  “আলীকে মুমিন ছাড়া কেউ ভালোবাসে না, আর মুনাফিক ছাড়া কেউ তাকে শত্রুতা করে না।" সূত্র (সুন্নী) 
সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং ৭৮

এখানে কোনো ব্যাখ্যার সুযোগ নেই।
— বরং প্রশ্ন থেকেই যায়, যে বা যারা আল্লাহর ওলী, নবীর জামাতা, নবীর ভাই আলীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে—সে বা তারা কোন শ্রেণির মানুষ ?
উপরের প্রশ্নের সহজ জবাবঃ যারাই হযরত আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে, তারা মুনাফিক৷৷ 

৪. সত্য জানা সত্ত্বেও আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ
—এটা ‘ইজতিহাদ’ নয়৷
অনেকে বলেন— “ওরা ইজতিহাদে ভুল করেছে।”
কিন্তু প্রশ্ন হলো—

যেখানে নবী আগেই বলে গেছেন—‘আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ মানেই আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ’, 

সেখানে আবার কিসের ইজতিহাদ?

কোন মুখে এ হেন ঘৃনিত কর্মকে ইজতিহাদ বলা হয় ?
 যেখানে নবীর স্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে, সেখানে এই যুদ্ধগুলি ইজতেহাদ বলা বিশাল জুলুম ও ইজরাঈল বা বিজেপিদের জুলুমের পথকে খুলে দেওয়া৷ 
বরং অপরদিকে আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামা এমন যুদ্ধবাজরা নবীর বিরুদ্ধেই যুদ্ধে নেমে ছিল, আর যারা নবীর বিরুদ্ধে  যুদ্ধকারী, তাদের ওপর ‘লানত’ পড়া কোরআনিক নীতি, অর্থাৎ নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামা এমন ব্যক্তিদের উপরে লানত পড়া ফরজ৷৷
এ প্রসঙ্গে কোরআন বলে, — “নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রসুলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের দুনিয়া ও আখিরাতে লানত করেছেন।” (সূরা আহযাব ৩৩:৫৭)

 যদি আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ = নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ হয়,
 তাহলে এই আয়াত কার উপর প্রযোজ্য?

৬. তাহলে প্রশ্ন একটাই—আপনি কার পক্ষে?
— আজ প্রশ্নটা খুব সরল— নবী (সঃ) একদিকে আর তাঁর ঘোষিত বিরোধিতাকারীরা অন্যদিকে

প্রশ্নঃ  আপনি কাদের পক্ষে?
— যদি নবীর পক্ষে হন—
তাহলে যাদের সম্পর্কে নবী নিজেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, তাদের বিষয়ে নীরবতা কি ঈমানদারি না বৈমানী ? বরং তারা ইজরাঈল ও বিজেপি'র মজবুত সদস্য৷ 

৭. ‘লানত’ কি গালি? না কি কোরআনিক অবস্থান?
‘লানত’ কোনো ব্যক্তিগত গালি নয়।
‘লানত’ মানে— আল্লাহর রহমত থেকে দূরে থাকার ঘোষণা।
নবী (সঃ) নিজেই বহু ক্ষেত্রে জালিম, মুনাফিক ও সত্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে লানত করেছেন—
এটা আকিদার প্রশ্ন, আবেগের নয়।

উপসংহার:

আলী (আ:)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ = নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ
নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধকারী কেউ হকপন্থী হতে পারে না কোরআন অনুযায়ী, রসুলবিরোধীদের উপর লানত বৈধ ও ন্যায্য সাহাবী পরিচয় সত্যের বিপক্ষে দাঁড়ানোর লাইসেন্স নয়,
সুতরাং প্রশ্ন আর আবেগের নয়—
এটা ঈমানের অবস্থানের প্রশ্ন।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha